অ্যাঞ্জেলস এন্ড ডেমনস: সিনেমার বাইরে

গত ১৫ ই মে সারা বিশ্বে আলোচিত মুভি অ্যাঞ্জেলস এন্ড ডেমনস যার জন্য বহুদিন ধরে দর্শকরা অপেক্ষা করে রয়েছে, মুক্তি পেয়েছে এবং যথারীতি আগের মুভি দ্যা দা ভিঞ্চি কোড এর মত আলোচনা এবং সমালোচনার ঝড় তুলেছে। এর মাঝেই ইন্টারনেটের কল্যানে বাংলাদেশে চলে এসেছে মুভিটি, অনেকেই দেখে ফেলেছেন কেউ কেউ দেখার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। পল্টনে মনি সিংহ ভবনের সামনে ফুটপাতে দশটাকায় বিক্রি হচ্ছে সেটাও দেখে এলাম। ভালো উদ্যোগ।

যেহেতু সিনেমাটা নতুন তাই এখনই কাহিনী বলে আগ্রহ নষ্ট করার কোন মানে হয় না। তবে এটুকু বলা যায় যে দা ভিঞ্চি কোডের মত এখানেও সিম্বলিজম আর ইলুমিনাতির ব্যাপক প্রয়োগ রয়েছে, রয়েছে খুন খারাপি, বিশপ, কার্ডিনাল আর ভ্যাটিকান সিটি। আর রয়েছে সেই বিখ্যাত রবার্ট ল্যাংডন। যদিও মুভিটা দা ভিঞ্চি কোডের সিক্যুয়াল হিসেবে তৈরী হয়েছে, মূল বইটা কিন্তু তা নয় যদিও একই নামে ড্যান ব্রাউনের একটি বহুল বিক্রিত বই রয়েছে। সেখানে অ্যাঞ্জেলস এন্ড ডেমনস প্রথম পর্ব আর দা ভিঞ্চি কোড দ্বিতীয়। এই অনিয়ম কিন্তু মুভির আনন্দ এবং উত্তেজনা মোটেও হ্রাস করেনি বরং ভিঞ্চি কোডের তুলনায় কম জনপ্রিয় হওয়ায় কাজটা সহজই হয়েছে।

পরিচালক রন হাওয়ার্ড তার দক্ষ পরিচালনায় আর টম হ্যাংকসের অসাধারন অভিনয়ের মধ্য দিয়ে মুভিটিকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। রন হাওয়ার্ড এর আগে এপোলো ১৩, সিনড্রেলা ম্যান, বিউটিফুল মাইন্ড, দা ভিঞ্চি কোড আর গেল বছরের হাড্ডাহাড্ডি লড়াকু ফ্রস্ট/নিক্সন এর মত বিখ্যাত মুভিগুলো পরিচালনা করেছেন। ২০০৮ এর ফেব্রুয়ারীতে কাজ কর্ম শুরু হয়ে ডিসেম্বরে রিলিজ হবার কথা থাকলেও স্ক্রিপ্ট রাইটারদের আন্দোলনের কারনে পিছাতে হয়েছিল।

শ্যুটিং এর আরও কিছু ছবি দেখতে পারেন এখানে

জুনের ৮ তারিখে শ্যুটিং শুরু হয়েছিল পবিত্র রোম শহরে, অপবিত্র মিথ্যাকে সাথে নিয়ে। ফেক ওয়ার্কিং টাইটেল “অবিলিস্ক” নিয়ে শুটিং শুরু হয় কিন্তু রোমান ক্যাথলিক চার্চ দা ভিঞ্চি কোডের “স্পর্শকাতর” থিম অপছন্দ করায় চার্চে শুটিং নিষিদ্ধ করা হয়। ফলে সে অংশটুকু সনির নিজস্ব স্টুডিওতে করা হয়েছিল। এ কারনে সেন্ট পিটার্স স্কোয়ারের একটি রেপ্লিকাও তৈরী করতে হয়েছিল পরিচালককে।

লেখকদের হরতালের কারনে হাওয়ার্ডকে সামারে শুটিং করতে হয়েছিল ফলে দর্শক সামলানোর বিশাল পরিশ্রমের কাজটিও তাকে করতে হয়। ন্যাচারালিজমকে এস্টাবলিশ করার জন্য হ্যান্ডহেল্ড ক্যামেরার বহুল ব্যবহার করা প্রয়োজন হয়েছিল।

এত কষ্ট করে যে মুভিটি তৈরী হয়েছে তার রিসেপশন কিরকম হয়েছে? সাউথ প্যাসিফিক ওসেনের দেশ সামোয়াতে মুভিটি ব্যান করা হয়েছে – সেই ক্যাথলিক চার্চ সংক্রান্ত বিষয়ে। শুরুর সপ্তাহে সারা বিশ্বে ১০৪ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে মুভিটি। কানাডা সহ বেশ কিছু দেশে টপচার্টের এক নম্বর জায়গাটি দখল করে রেখেছিল প্রথম সপ্তাহে, পরবর্তীতে অবশ্য সে অবস্থান থেকে টলেছে।

ডাউনলোড লিংক

সূত্র: উইকিপিডিয়া
আইএমডিবি

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

One Comment on “অ্যাঞ্জেলস এন্ড ডেমনস: সিনেমার বাইরে”

  1. টম হ্যাঙ্কস হলো এমন এক অভিনেতা যার সব সিনেমাই নিশ্চিন্তে দেখা যায়। অসাধারণ অভিনয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *