দ্য আর্ট ওব ওয়ারে অধ্যায়ের সংখ্যা অল্প, মাত্র তেরটি। অধ্যায়গুলোও ছোট ছোট। সান জু অনেকটা আদেশ নিষেধের মত করে সামরিক জেনারেলদের বাহুল্যবর্জিত নির্দেশনা দিয়েছেন। বিভিন্ন সময়ে অনুবাদকবৃন্দ এর সাথে টিকা টিপ্পনী যুক্ত করেছেন, নিজেদের অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগে উদাহরণ যোগ করেছেন। বাংলাদেশী লেখক মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান সেরকমই একজন। সান জু'র দ্য আর্ট অব ওয়ার থেকে তিনি সান জু'র নির্দেশনাগুলো নিয়ে বিভিন্ন ঐতিহাসিক যুদ্ধ-অভিযানের ঘটনাবলী উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপন করে লিখেছেন 'আধুনিক দৃষ্টিকোণে সান জু'র দ্য আর্ট অব ওয়ার'।

সান জু'র নির্দেশিত কলা-কৌশলের ব্যাখ্যা এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে উদাহরণ উপস্থাপন করে লেখক বইটিকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছেন। পাঠকের কাছে বইটি যেমন অত্যন্ত সহজবোধ্য হয়ে ধরা দিয়েছে, তেমনি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়া আকাঙ্ক্ষার পরিতৃপ্তি ঘটিয়েছে। উদাহরণের ক্ষেত্রে লেখক প্রাচীনকালের বিভিন্ন যুদ্ধ, বিখ্যাত মুসলমান সেনাপতি এবং তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত যুদ্ধ, বিশ্বযুদ্ধ এবং আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে বেছে নিয়েছেন। পরিচিত গন্ডি থেকে তুলে আনা এ উদাহরণগুলো বইয়ের সাথে পাঠককে একাত্ম হতে সহায়তা করবে।
সান জু'র সামরিক কলাকৌশলের ব্যাখ্যা এবং বাছাইকৃত উদাহরণ থেকে লেখকের সামরিক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। পেশাগত জীবনে মেজর মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান, পিএসসি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ, স্কুবা ডাইভার এবং বোম্ব ডিসপোজাল অপারেটর। চাকুরীজীবনে মেজর দেলোয়ার পার্বত্য চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং জাতিসংঘের শান্তি মিশনে অংশগ্রহণ করেছেন। যুদ্ধবিগ্রহ এবং সামরিক কৌশল সম্পর্কে তার অর্জিত জ্ঞানের পরিচয় তিনি তার আরেকটি বই 'মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদ এর ইয়ারমুক যুদ্ধ'-তেও রেখেছেন।
'দ্য আর্ট অব ওয়ার' মূলত সামরিক বাহিনীর প্রধান এবং শাসকবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে লেখা হলেও সান জু নির্দেশিত কলাকৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। শোনা যায়, ২০০২ ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ফুটবল কোচ স্কলারি দলকে গড়েছিলেন আর্ট অব ওয়ার অনুসারে। কর্পোরেট জগতে এই বই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে। অনেক প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজারদেরকে এই বই পড়তে উৎসাহ দেয়া হয়। এ সকল ক্ষেত্রে আর্ট অব ওয়ার মূল বই পড়ার চেয়ে মেজর দেলোয়ার হোসেন খান, পিএসসি রচিত 'আধুনিক দৃষ্টিকোণে সান জু'র দ্য আর্ট অব ওয়ার' পাঠ অনেক বেশি কার্যকর হবে বলে মনে করি।
4 মন্তব্যসমূহ
বইটা আসলেই খুব সুন্দর, ডি এইচ খানের বাংলা অনুবাদটাও অসাধারণ। আমি আমার সাইটে বইটির PDF আপলোড করেছি (Fully Mobile Optimized PDF)।
উত্তরমুছুনথ্যাংকিউ নুসরাত নাজনীন। আবারও আসবেন।
উত্তরমুছুনবেশ জনপ্রিয় বই, জনপ্রিয় সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে এখন। আপনার পর্যালোচনা পড়ে ভালো লাগলো, পড়তে হবে।
উত্তরমুছুনস্বাগতম এবং আন্তরিক ধন্যবাদ কবির নাঈম। আপনার ওয়েবে ঢুঁ মেরে এসেছি (কমেন্ট করার জায়গা পাইনি ;) )। আপনার জন্য শুভকামনা রইল :)
উত্তরমুছুন