বুফে-তে খেতে গেলে যে আইটেমের খোঁজ করি এবং খাই সেটা হল কাঁকড়া। ভালো ভাজা কাঁকড়া বিস্কুটের মত মড়মড় শব্দ তোলে – স্বাদটা যে আসলে কিরকম ঠিক স্পষ্ট করে বোঝাতে পারবো না। সমুদ্রের তীরে সবসময়ই কাঁকড়া ভেজে বিক্রি করতে দেখি, কিন্তু কখনো খাওয়া হয় নি।
একা একা সৈকতে ঘুরছিলাম, একটা দোকানের সামনে দাড়ালাম। টেবিল ভর্তি নানা পদের সামুদ্রিক মাছ সাজিয়ে রাখা আছে। এক পাশে কাঁকড়া। ছোটটার দাম বিশ টাকা, বড়টা ত্রিশ টাকা। বুফের কাঁকড়ার উপর ভরসা করা যায় – এখানে কি হবে জানি না – তারপরও সাহস করে একটা কাঁকড়া-ভাজার অর্ডার দিয়ে ফেললাম।
ছেলেটা একটা কাঁকড়া বেছে নিয়ে একটা ছোট বালতিতে রাখা পানিতে ডুবিয়ে ধুয়ে নিল। যে প্রাণীটা পানিতেই থাকে তাকে ধুয়ে আসলে কি হল কে জানে! একটা ছোট ছুরি দিয়ে কাঁকড়াটার শরীরে বেশ কয়েক জায়গায় কাটাকুটি শেষে খাবার উপযোগী করা হল। তারপর আবার পানিতে ধোয়ার পালা। এবার একটু বেশী সময়, নাড়িভুড়ি পরিষ্কার করার জন্য বোধহয়। ছোট ছোট দুয়েকটা প্লাস্টিকের বয়াম থেকে বিভিন্ন পদের গুড়া মশলা একটু পানিতে মেখে মশলা বানানো হল। সেই মশলা মাখানো হল কাঁকড়ার শরীরে।
কেরোসিনের চুলায় তেল গরম হচ্ছিল। সেখানে মশলা মাখানো কাঁকড়াটা ছেড়ে দেয়া হল। মিনিট পাঁচেক ভাজাভুজির পর তুলে পরিবেশন করা হল ভাজা কাঁকড়া।
খাওয়া শুরু করলাম – প্রত্যেকটা প্রত্যঙ্গ ছিড়ে একবার করে গন্ধ শুকে নিয়েছি – নো গন্ধ! কাঁকড়ার ঠ্যাং-গুলো মচমচে হয়ে গেছে। দাঁতের চাপে কড়মড় করে গুড়া হয়ে যাচ্ছে। ভালো। ঠ্যাং শেষ করে বডিতে গেলাম – তেলে ভাজা উপরের অংশও ঠ্যাং ভাজার মত – কড়মড়ে। ভেতরে মাংশটুকু মুখে দেয়ার সময়টি ধক্ করে বোটকা একটা গন্ধ ঢুকে গেল নাকের ভেতর। ইয়াক। এই অংশে মশলা পৌছায় নি, তেলও বোধহয় ভালো করে পৌছায় নি। আদ্দেকটা মুখে নিয়েছিলাম, ওটা গিলে ফেললাম – আফটার অল, ওটাই মূল (!) কাঁকড়া, বাকী আদ্দেকটা ফেলে দিতে হল – বুফের কাঁকড়াই ভালো
*এই পোস্টটা Save Our Sea পেইজের জন্য উৎসর্গিত।