পার্মানেন্ট গার্লফ্রেন্ড না থাকার কৃত্রিম আফসোস প্রকাশ করে অপরপ্রান্তের মেয়েটিকে পটানোর চেষ্টারত ছেলেটির কন্ঠস্বরে যখন ঘুম ভাংল তখন রাত দেড়টা বাজে। পাঁচ ঘন্টার ঝটিকা বরিশাল ট্যুর শেষ করে পারাবত লঞ্চের সোফায় ঘুমিয়ে ঢাকা ফিরছি। পাশাপাশি দুটো সোফা, আমি যে প্রান্তে মাথা দিয়েছি, সেই একই প্রান্তে সেই ছেলেরও মাথা। মেয়ে পটানোর চেষ্টায় সেই ছেলে এতই উত্তেজিত যে রাত দেড়টায় এত উচ্চস্বরকে সে গোনায় ধরছে না। আমি বার তিনেক আওয়াজ করলাম – আস্তে! এইযে আস্তে কথা বলেন!! হ্যালো!!! – পাত্তা পাওয়া গেল না। ছেলের অনেক ডিমান্ড, ইনবক্সে বিশ পঁচিশটা মেয়ে ফোন নাম্বার চেয়ে মেসেজ দেয়, নাম্বার দিলে ফোনও করে – আরও কি কি বলে/করে সেই ফিরিস্তি দিচ্ছে সেই মেয়েকে – অথচ এদিকে লেপ মুড়ি দিয়েও কানে ফিরিস্তির প্রবেশ বন্ধ করতে পারছি না। বাধ্য হয়ে উঠতে হল।
মাথার বালিশ পায়ের দিকে নিয়ে উল্টে শুয়ে পড়লাম – এবার আমার পা সেই ছেলের মাথার দিকে। লাভের মধ্যে যা হল – সম্পূর্ণ বাক্য শুনতে পারছি না কিন্তু কথার আওয়াজও বন্ধ করা যাচ্ছে না। ছেলেটাকেও উল্টে দিতে পারলে বোধহয় পুরোপুরি নিঃশব্দ হওয়া যেত – কিন্তু তাকে সেটা বলাটাও সম্ভব না। প্রেম পিরিতির এই যুগে আমি সেকেলে বুড়ো – বুড়োদের মতই চোখ নিচু করে পথ চলা ছাড়া উপায় নেই, অথচ এদিকে ঘুমটাও জরুরী। তখনই কুবুদ্ধির আইডিয়া! ১০০ পাওয়ারের বাল্ব দপ করে জ্বলে উঠল।
লেপের নিচ থেকে সারাদিন পড়ে থাকা মোজাসহ পা-টা বের করে দিলাম, তারপর নাচাতে শুরু করলাম। ক্ষীণ আশা – শীতকালে মোজায় যে দুর্গন্ধ হয় তা বাতাসে ভেসে ভেসে পৌছে যাবে ভদ্রলোকের নাকে – সহ্য করতে না পেরে হয়তো সেও উল্টে শুয়ে পড়বে – বেঁচে যাবো আমি!
আইডিয়া কতটা কাজ করেছে জানা গেল না, পা নাচাতে নাচাতে নিজেই ঘুমিয়ে গেলাম