ইটস কম্প্লিকেটেড

‘এ’ যখন স্কুল পেরিয়ে কলেজে ঢুকল, তখনো সে সিঙ্গল এবং যখন তার আশে পাশের কম্প্লিকেটেড বা ইন আ রিলেশনশিপের বন্ধুরা তাকে তাচ্ছিল্য অথবা করুণা করতে শুরু করল, তখন সহ্য করতে না পেরে একদিন এ তারই ক্লাসমেট ‘বি’ কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ফেলল। সিঙ্গল থাকতে থাকতে ‘বি’-ও অসহ্য হয়ে পড়েছিল, তাই ‘এ’ ঠিক রাইট চয়েস না হওয়া সত্ত্বেও ‘বি’ রাজী হয়ে গেল এবং দুজনেই সিঙ্গল থেকে ইন আ রিলেশনশিপে প্রমোটেড হল।
ভালোই চলছিল। ‘এ’ এর ফ্রেন্ড ‘সি’র সাথে সম্পর্ক ছিল ‘ডি’ নামের একজনের, কিন্তু কি এক কারণে তাদের রিলেশনশীপ কম্প্লিকেটেড হয়ে গেল। কম্প্লিকেটেড রিলেশনশীপটা অসহ্য। এতদিনের অভ্যাসকে মানিয়ে নেয়া কষ্ট হচ্ছিল, তাই ‘সি’ সাহায্য চাইল ‘এ’র। বেশী কিছু নয়, সামলে উঠা পর্যন্ত একটু পাশে থাকলেই চলবে। বন্ধু ‘সি’র জন্য এতটুকু করতে ‘এ’র আপত্তি ছিল না। কিন্তু ‘ডি’কে ভুলে থাকতেই যেন ‘সি’ একসময় ‘এ’তে ডুব দিল। ‘বি’কে বাদ দিয়ে ‘সি’র সাথে সম্পর্কে জড়ানোর কোন ইচ্ছা ছিল না কিন্তু একদিন ‘বি’র সাথে তার ঝগড়া হল এবং ব্রেকআপ হয়ে গেল। ‘বি’কে ভুলে যাওয়ার জন্য ‘সি’র সাথে ইন আ রিলেশনশীপে গেল ‘এ’, অন্যদিকে ‘এ’র সাথে ব্রেকআপ হয়ে যাওয়ায় সিঙ্গল ‘বি’ অল্প কদিনেই ‘এফ’ এর সাথে রিলেশনশিপে শিফট করল। এদিকে ‘সি’র মনে হচ্ছিল ‘এ’র তুলনায় ‘ডি’ই হয়তো বেটার কিন্তু ‘ডি’ ততদিনে ‘ই’র সাথে ইন আ রিলেশনশীপ। ‘ই’র সাথে রিলেশনশিপ হয়ে গেলেও ‘সি’ ‘ডি’র সাথে শুধু ফ্রেন্ড হয়ে থাকতে চাইল। ‘ডি’র কোন আপত্তি ছিল না, কারণ সি’ও তো একজন ‘এ’র সাথে ইন আ রিলেশনশিপ, কিন্তু ‘ই’র জন্য ব্যাপারটা সহজ ছিল না। সে বুঝতে পারছিল এভাবে চললে শেষ পর্যন্ত ‘ডি’র সাথে ‘সি’র সম্পর্ক ইন আ রিলেশনশিপ হলেও হতে পারে কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাথে কম্প্লিকেটেডই থেকে যাবে। ফলে ‘ই’ চাচ্ছিল একজন ‘জি’কে খুঁজে নিতে যে কিনা শেষ পর্যন্ত তারই মত হবে। একজন ‘জি’কে সে পেয়েও গেল, কিন্তু ‘জি’ কিছুদিন ‘ই’র সাথে ইন আ রিলেশনশিপ থাকার পর বুঝতে পারল ‘ই’ ইজ নট দ্য রাইট চয়েজ। ফলে সে ‘এইচ’ এর দিকে ঝুকতে শুরু করল। ‘ই’ ভেবেছিল, এই শেষ, সে সারাজীবন সিঙ্গলই থেকে যাবে, কিন্তু একদিন ‘আই’ তাকে প্রপোজ করে ফেলল। ‘আই’ এর আছে এমন এক ইতিহাস যেখানে বি, সি, এইচ কিংবা অন্যান্য আরও অনেকের নাম আছে। এমন একজন ‘আই’ এর প্রপোজাল গ্রহণ করার ব্যাপারে ‘ই’র আপত্তি ছিল অনেক, কিন্তু একটু ভাবতে গিয়ে সে টের পেল ‘আই’ এর তুলনায় সে ভালো অবস্থানে থাকলেও তার ইতিহাসেও আছে ‘ডি’ কিংবা ‘জি’র মত মানুষেরা।
‘ই’ বুঝতে পারছিল এই তালিকায় আরও নাম যুক্ত হবে, যুক্ত হবে ‘আই’এর তালিকায়ও, কিন্তু সে বুঝতে পারছিল না এ, বি, সি, ডি, ই, এফ, জি, এইচ, আই এবং তারপরে জে, কে, এল, এম, এন, অথবা ও, পি, কিউ, আর, এস, টি বা ডব্লিউ, এক্স, ওয়াই, জেড মিলে জটিল যে জাল তৈরী হচ্ছে তার সমাপ্তি আসলে কোথায়?

About দারাশিকো

আমি নাজমুল হাসান দারাশিকো। লেখালিখির প্রতি ভালোবাসা থেকে লিখি। পেশাগত এবং সাংসারিক ব্যস্ততার কারণে অবশ্য এই ভালোবাসা এখন অস্তিত্বের সংকটে, তাই এই ওয়েবসাইটকে বানিয়েছি আমার সিন্দুক। যোগাযোগ - darashiko(at)gmail.com

View all posts by দারাশিকো →

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *